এটি একটি রূপকথাধর্মী গল্প। চীনদেশে ছিল এক ছোট্ট ও সুকণ্ঠী কোকিল। একদিন রাজদরবারে ডাক পড়ল তার। রাজা কোকিলের গানে মুগ্ধ হয়ে তাকে রেখে দিলেন রাজসভাতেই, সোনার খাঁচায় পুরে। এবার তার প্রতিদ্বন্দ্বী হলো এক কলের কোকিল। গৎবাঁধা তার কণ্ঠ ও সুর। তবু সবাই তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ কলের কোকিলের প্রশংসায় অবহেলিত আসল কোকিল একদিন রাজপ্রাসাদ ত্যাগ করল। এরই মধ্যে কলের কোকিলের তার ছিঁড়ে গেল। তাকে মেরামত করা হলো বটে, তবে আগের মতো আর টানা বাজে না। রাজ্যে পড়ে গেল হাহাকার। রাজাও হলেন বেজায় অসুস্থ, পড়ে রইলেন বিছানায় নিথর। কিন্তু রাজা মারা যাননি, তবে মৃত্যুভীতি তাঁর বুকে চেপে বসেছে। আর মুমূর্ষু রাজা কলের কোকিলের উদ্দেশে বলছেন, গান গাও, গান। কিন্তু কলের কোকিল চুপ, কণ্ঠে তার গান নেই। ঠিক সে সময় জানালার বাইরে গান গেয়ে উঠল ছোট্ট সেই কোকিল, অপূর্ব সে সুর। গান তার আর থামে না। রাজ্যের এই দুর্দিনে রাজার প্রাণ রক্ষা করতে সে এসেছে ফিরে। সারারাত মধুর গান গেয়ে রাজাকে ঘুম পাড়াল কোকিল। সকালে রাজা জেগে উঠলেন- পেলেন নতুন জীবন, নতুন উৎসাহ। বিনিময়ে কোকিল কিছুই নিল না কৃতজ্ঞ রাজার কাছ থেকে। শুধু স্বাধীনভাবে রাজা, প্রজা, জেলে, চাষি সকলের জন্য দুঃখ-সুখের গান গাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করল আর সবার অগোচরে রাজাকে জানাতে চাইল রাজ্যের সত্যিকার সকল খবর।
আসলে যে সত্যিকার উপকারী, সে কিছু পাওয়ার আশায় উপকার করে না। অন্যদিকে যন্ত্রের চাকচিক্য সবসময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিকল্প হয় না। গল্পটিতে এসব সত্যের প্রকাশ ঘটেছে।
common.read_more